শিরোনাম | মেঘডুবি |
---|---|
ISBN | 9789849478478 |
রাজা পাথরের ঠিক পাশেই নিখোঁজ হওয়া আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য বাবলু শিকদারের লাশটা ভেসে ওঠে।
ক্রাইত পালিয়ে যাবে ভাবে। পাহাড় থেকে অন্ধকার নেমে আসছে নিচে পিশাচের মতোন। অন্ধকারের শরীর পেঁচিয়ে ধরেছে শীত। কাঁপুনি ধরে। ক্রাইত ঠকঠক করে কাঁপে। শীতে না ভয়ে বোঝা যায়না!
সাঙ্গু নদীর বুকের ভেতর থাকা সবচেয়ে বড় পাথর হিসেবে পরিচিত রাজা পাথরটার পাশে থম মেরে বসে থাকে ক্রাইত। নৌকাটা একটু আধটু দোলে সামান্য ঢেউয়ের ওপর। কিছু করার নেই। এখানে সময় স্থির। অল্প বয়সের ছেলে ক্রাইতের খুব ইচ্ছে হয় বাবাকে ডাকতে। ‘ও বাবা, ভয় করে। নিয়া যান। আর আসবো না ইদিকটায়।’ বলতে ইচ্ছে করে। গলা থেকে বের হয়না কিছু। গলা শুকায়। লাশের গন্ধ ছড়ায়। বাবলু শিকদার কেমন তাকিয়ে আছে! চোখদুটো বড্ড প্রাণবন্ত। কথা বলতে চায়।
‘তোমার নাম কী ছেলে?’ কথাও বলে কী বাবলু শিকদার!
‘ক্যক কা ক্রাইত’
‘সুন্দর নাম। আমারে কবর দিতে পারবা মাটিতে? এই পানিতে ভাসাভাসি কঠিন খুব। শীত। জাকানো শীত। আমার শীতে সমস্যা। ঠান্ডা, কাঁশি, সর্দি। খক খক।’ কাঁশেও বাবলু শিকদার। গলা দিয়ে কালো, জমাট রক্তের মতোন বের হয়ে আসে।
‘আমি যাবো মাচাং এ। বাড়িত মেহমান। যাইতে দ্যান।’ কন্ঠে আঁকুতি ক্রাইতের। একটা মরা, নির্জীব দেহের কাছে হার মেনে বসে আছে।
‘আমার সাথের অস্ত্রটা কই? অস্ত্র ছিলো তো একটা। সরকারী রাইফেল। দেখো তো ক্রাইত। আমাকেও তোমার সাথে নিয়ে যাও।’ এই বলে বাবলু শিকদার ক্রাইতের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। ক্রাইত স্পর্শ টের পেতেই ভগবানকে ডাকতে ডাকতে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায় নৌকার পাটাতনের ওপর। পাহাড়ী কলার ছড়ার ওপর ভারী মাথাটা পড়ায় থেতলে যায় কিছু কলা। তারপর নিশ্চুপ। কিছুক্ষন শুধু ছোট ছোট পাথরের সাথে জলের ধাক্কার আওয়াজ পাওয়া যায়। এইতো!
Reviews
There are no reviews yet.